ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ০২/০৩/২০২৪ ১০:২৫ এএম

একমাসে ৭ লাখ ৬৪ ইয়াবা ও দেড় কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস সহ ১৫ জনকে আটক করেছে বিজিবি ও পুলিশ

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতের মধ্যেও আসছে ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ আইসের মতো ভয়াবহ মাদক। গত ১ মাসে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাত তীব্র হলেও এই সময়ের মধ্যে ৭ লাখ ৬৪ হাজার ৯০০ ইয়াবা, দেড় কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস উদ্ধার করেছে সীমান্তরক্ষী বিজিবি ও পুলিশ। এসব ঘটনায় আটক করা হয়েছে ১৫ পাচারকারিকেও।
এর মধ্যে সর্বশেষ শুক্রবার সকালে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের কাটাবুনিয়া এলাকা থেকে ১ লাখ ইয়াব াসহ মো. উসমান নামে (৩৪) একজনকে আটক করেছে বিজিবি।
আটক উসমান সাবরাং ইউনিয়নের কাটাবুনিয়া এলাকার আব্দুল মাবুদের ছেলে।

বিজিবির টেকনাফস্থ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, সকালে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কাটাবুনিয়া সাগর সংলগ্ন উপকুলে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দু’টি প্লাস্টিকের ব্যাগের থাকা ১ লাখ ইয়াবা সহ একজনকে আটক করা হয়। এব্যাপারে মামলা করে আটককে টেকনাফ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
বিজিবির এক তথ্য বিবরণীতে দেখা গেছে, ৬ ফেব্রুয়ারি ৬৪ হাজার ৬০০ ইয়াবা, ৯ ফেব্রুয়ারি ৩ লাখ ইয়াবা ও দেড় কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস, ১২ ফেব্রুয়ারি ১ লাখ ইয়াবা, ১৪ ফেব্রুয়ারি ৬০ হাজার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ১০ হাজার ইয়াবা, ১ ফেব্রুয়ারি ১ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করেছে। এসব অভিযান আটক হয়েছে ৫ জন।
অপর দিকে টেকনাফ থানার এক বিবরণীতে দেখা যায়, পুলিশ ৭ ফেব্রুয়ারি ১৫ হাজার ইয়াবা সহ ১ জন, ২১ ফেব্রুয়ারি ১ লাখ ১৮ হাজার ইয়বা সহ ২ জন, ২২ ফেব্রুয়ারি ৩ শত ইয়াবা সহ ৫ জন ও ২৮ ফেব্রুয়ারি ১ হাজার ইয়াবা সহ ৩ জনকে আটক করেছে।
বিজিবির টেকনাফস্থ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, বিজিবি সীমান্ত সুরক্ষা ছাড়াও চোরাচালান, মাদকদ্রব্য, অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় সীমান্ত অপরাধ দমনে যথাযথ ও কার্যকরীভাবে পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। সীমান্তে সর্বোচ্চ সর্তক রয়েছে। ফলে মাদক রোধে কার্যকর অভিযান চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে নানা কৌশলে ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ আইস পাচার হয়ে আসার বিষয়টি দীর্ঘদিনের। যার পেছনে পৃষ্ঠপোষকতায় বারবার নাম আসে মিয়ানমার সরকারের জান্তা বাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের একাধিক তালিকায় বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বিজিপির অধিনেই ইয়াবা সহ অন্যান্য মাদক বেচা-বিক্রি হয়ে আসছে। কিন্তু গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলে তুমুল লড়াই। গোলাগুলি, মর্টারশেলের গোলাবর্ষণ ও হেলিকপ্টার থেকে গোলা ছোঁড়ার মাধ্যমে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপিকে হটিয়ে ঘাঁটিগুলো দখলে নিয়েছে স্বাধীনতাকামি গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এখন ঘাঁটিগুলোতে শক্ত অবস্থানে রয়েছে আরাকান আর্মির সদস্যরা। কিন্তু তারপরও মাদক দ্রব্য মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পাচারে উদ্বিগ্ন জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল।
এমন পরিস্থিতিতে সীমান্তের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী ও বিজিপির পৃষ্ঠপোষকতায় মাদকের গডফাদাররা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাচার করতো মাদকদ্রব্য ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ আইস।
এ জনপ্রতিনিধির প্রশ্ন এখন আরাকান আর্মিও কি সিন্ডিকেট করে সীমান্তে দিয়ে বাংলাদেশে মাদক পাচার করছে? তা না হলে সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার বন্ধ হচ্ছে না কেন?
ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, এখন মাদকের নতুন চ্যালেঞ্চ তৈরি হয়েছে। সীমান্তের এই সংঘাত পরিস্থিতিতে আরাকান আর্মির ভূমিকা পরিষ্কার না। এখন মাদকের চালান প্রবেশ অনেক বেশি চিন্তার।
তবে এর জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী মাদকপাচার প্রতিহতে সবাই একযোগে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি।
তিনি বলেন, সীমান্তে বিজিবি রয়েছে। এর বাইরে পুলিশ, র্যা ব, কোস্টগার্ড কাজ করছে। মাদক রোধে সকলেই সর্তক।

পাঠকের মতামত

১৫০ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে ২৮৫ সেনাকে নিয়ে ফিরবে মিয়ানমারের জাহাজ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জা‌নি‌য়ে‌ছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ২৮৫ ...

সোনার দামে আবারও রেকর্ড, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা

আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। প্রতি ভরিতে ...